শিল্পকলায় নাটক বন্ধের নিন্দা উদীচীর

26

ডেস্ক রিপোর্ট: গুটিকয়েক মানুষের বিক্ষোভের মুখে শিল্পকলা একাডেমিতে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

রোববার (৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, এ ঘটনার মাধ্যমে দেশে সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করা হলো।

বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা বলেন, গতকাল শনিবার দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরান’ নাটকের প্রদর্শনী চলার সময় শিল্পকলা একাডেমির গেটের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন একদল মানুষ। নাটকের দলটির একজন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। এক পর্যায়ে ভেতরে ঢুকতে চাইলে নিরাপত্তা বিবেচনায় নাটকের শো বন্ধের নির্দেশ দেন শিল্পকলার মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।

উদীচী মনে করে, এভাবে কোনো নাটকের শো বন্ধ করে দেওয়া প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে কোনভাবেই সহায়ক নয়। কেউ দোষী হলে বা অন্যায় করলে তাকে দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনাটাই যুক্তিযুক্ত কাজ। শিল্পকলায় কারা, কেন বিক্ষোভ করেছেন, তাদের পরিচয় কী, সেখানে মুখোশধারী কেউ ঢুকে পরিস্থিতির ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে কিনা, অথবা শিল্পকলার ভেতরের কেউ এর সঙ্গে জড়িত কিনা সেসব বিষয় খতিয়ে দেখে দ্রুত তদন্ত করার দাবিও জানান উদীচীর নেতৃবৃন্দ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করছে মানুষ।
যারা আন্দোলনে হতাহত হয়েছেন, তাদেরও অন্যতম লক্ষ্য ছিল বাকস্বাধীনতা ও মুক্তমত চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তে অর্জিত বিজয়ের পর থেকেই কোনো কোনো গোষ্ঠী অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টা করছে। তারা প্রগতিবিরোধী, মানুষের মুক্তি চায় না। মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায় তারা। এমন অমানবিক কাজ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অন্তরায় বলে মনে করেন উদীচীর নেতৃবৃন্দ।

দেশে অবিলম্বে সংস্কৃতি চর্চার অবাধ পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানান উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। একইসঙ্গে যারা মানুষের মুক্তিতে বিশ্বাসী তাদেরকে ঘরে বসে না থেকে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বানও জানান তারা। মানুষের মুক্তির সংগ্রামকে অব্যাহত থাকবে বলেও বিবৃতিতে মন্তব্য করেন অধ্যাপক বদিউর রহমান ও অমিত রঞ্জন দে।