নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারে মাদকের ছড়াছড়ি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপথে চলে যাচ্ছে উঠতি বয়সি যুবক ও তরুনেরা। যে কারনে অহরহ মারমারি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরনের লক্ষ্যে এবং সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে সাভারে মাদক ব্যবসায়ীদের হুশিয়ারি করতে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে এলাকার সচেতন নাগরিকেরা।
শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে সাভারের মাদক পল্লী খ্যাত বেঁদে পাড়ায় সচেতন বেঁদে পরিবারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। বেঁদে পল্লীর পোড়াবাড়ি তিন রাস্তার মোড় থেকে শুরু হয়ে নামাবাজার বাঁশ পট্টি ঘুরে একই স্থানে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে হ্যান্ড মাইকে মাদক ব্যবসায়ীদেরকে মাদক বিক্রী ছেড়ে ভালো হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়।
পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মাসুদ হাসান খোকন বলেন, বেঁদে পল্লীতে বেঁদেরা ছাড়াও বহিরাগত মাদকের ডিলাররা মাদক বিক্রী করে। সমাজ রক্ষার তাগিতে আমরা এলাকার মাদবরদের নিয়ে মিটিং করে মাদকমুক্ত বেঁদেপল্লী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাদক ব্যবাসয়ী যেই হোক তাদেরকে ধরে আমরা আইনের কাছে সোপর্দ করবো।
বয়োবৃদ্ধ লস্কর মাদবর বলেন, আমাদের পোড়াবাড়ি, কাঞ্চনপুর, অমরপুর ও বক্তারপুর এলাকায় মেয়েছেলেসহ অনেকেই মাদকের ব্যবসা করেন। আমরা সবই জানি এবং দেখি। সমাজকে রক্ষার জন্য আপনারা মাদক বিক্রী ছেড়ে দেন, না হলে আমরা প্রশাসনের সহায়তায় আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
অন্যদিকে আশুলিয়ার খেঁজুরটেক এলাকার কোরবান আলীর ছেলে মজিবর রহমান তাঁর ছেলে সামিউল আলম সৈকত দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। স্থানীয় হাটুভাঙ্গা ব্রীজ, কালারটেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলের টেক, নলাম, ধামরাইসহ সৈকতের অফিসের পিছনের বাগানে শতাধিক ডিলার দিয়ে মাদক বিক্রী করছে তারা। বিষয়টি একাধিকবার থানা, ডিবিসহ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে জানানো হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে তারা মাদক বিক্রী করে যাচ্ছে।
আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবর ও তার ছেলে সৈকতের মাদক, সন্ত্রাসী ও অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গত ৭ এপ্রিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসীরা। পরে মানবন্ধনে অংশ নেয়া ব্যক্তিদেরকে হুমকি দেয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে মিথ্যা মামলা দেয়ার ভয় দেখায়। আমরা এবিষয়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ভুক্তভোগী ইকরাম হোসেন বলেন, তিন মাস সৈকত আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ইয়াবা বিক্রী করতে বলে। আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে মারধর করে হাসপাতালে ভর্তি করে বাসায় তালা লাগিয়ে দেয়। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেও বিচার পাইনাই। পুলিশ আসছিল তাদের টাকা দিয়ে পাঠায় দিয়েছে সৈকত। তার কাছে রামদা, পিস্তল, চাইনিজ কুড়াল আছে। ভয়ে গত ২ মাস ধরে আমি অন্য এলাকায় বসবাস করতেছি।
ভুক্তভোগী মুকুল হোসেন বলেন, ঈদের ৫ দিন আগে সৈকত তার অফিসে নিয়ে আমার হাত-পা, চোখ বেঁধে মারধর করে ইয়াবা বিক্রি করতে বলে। আমি রাজি না হওয়ায় প্রশাসনের হাতে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখাইয়া ২০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে আত্মীয় স্বজনরা ১০ হাজার টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে নেয়। ভয়ে কোন মামলা করিনাই, থানায় যাই নাই।
আরেক ভুক্তভোগী কবির বলেন, কোন কারন ছাড়াই ২৬ রমজানে সৈকত লোকজন দিয়ে তার অফিসের ধরে আনে। পরে তার সহযোগী তোফাজ্জল, রাব্বি, মনির সহ কয়েকজন আমাকে মারধর শুরু করে। আমি এর বিচার চাই।