ডেস্ক রিপোর্ট: ট্রেনের অনলাইন টিকেটিং পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন ও নতুন সুবিধা আনার কথা জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের রুট রেশনালাইজেশন এবং ই–টিকেটিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির বলেন, আজ একটা প্রেজেন্টেশন হয়েছে। সেখান আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। রেলের টিকেটিং পদ্ধতি নিয়ে একটা ডায়াগনস্টিক (কিছু সমস্যা চিহ্নিতকরণ) হয়েছে। ফাওজুল কবির খান বলেন, চালডালের (অনলাইন ক্রয়বিক্রয় প্ল্যাটফর্ম) নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলী, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ফিজার আহমেদ ও আনিকা জারা আজ ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন বিষয় জানিয়েছেন। তাঁরা সবাই ভালো কম্পিউটার এক্সপার্ট। অনলাইনে টিকেট কাটার জটিলতা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের প্রেজেন্টেশনে দেখা গেল, কমলাপুর থেকে টিকেট চাইলেন, সেখানে নেই। কিন্তু তেজগাঁও থেকে আছে। আবার ৭টার ট্রেনে টিকিট নাই কিন্তু ১০টার ট্রেনে আছে। তবে সেটির কী অবস্থা তা জানা যাচ্ছে না। এই বিষয়টি ঠিক করতে রেলওয়ের অনলাইন টিকেটিং পদ্ধতির সহযোগী সহজকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, যাত্রী যেন এখন থেকে এটা (টিকিটের অবস্থা) দেখতে পান—কখন, কোথায় কোন স্টেশন থেকে টিকেট আছে। সহজ বলেছে, আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে এটা ঠিক করা হবে। না হলে আপনারা অভিযোগ করবেন।মৌখিক বা টেলিফোনে কারও অনুরোধে টিকিট কেটে দেওয়ার চর্চা বন্ধ করা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, রেলে অনেক কর্মকর্তা আছেন, এখানে কাজ করেন। কিন্তু এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, এটা জনগণের সম্পত্তি। রেলের সচিব, মন্ত্রীর জরুরি কাজ আছে বলে অন্যদের নাই এমন তো না। আমরা দেশটাকে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই।
মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে এখন থেকে। আবার বিভিন্ন স্টেশন থেকেও টিকিট বরাদ্দ আছে। এখন সেটা এক স্টেশনে বিক্রি না হলে অন্য স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। সেটাও সহজকে বলা হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উপদেষ্টা বলেন, দেখা গেল অনলাইনে টিকিট পাওয়া যায় না। কিন্তু কালোবাজারে ২০০ বা ৩০০ টাকায় টিকিট পাওয়া যায়। এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।যারা কালোবাজারি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা রেলের লোক, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেব। আমরা সমস্যার গোড়ায় যেতে চাই। সবাই বলে, এই সরকার কিছু করে না। কিন্তু এটা সময় লাগবে। আমরা গত এক মাসে সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফাওজুল কবির বলেন, আমাদের যথেষ্ট লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) নাই, কোচ নাই। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।
রেলের রুট রেশনালাইজেশন (যৌক্তিকীকরণ) করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে যাত্রী নাই সেখানে ট্রেন যাচ্ছে। আবার যেখানে যাত্রী আছে সেখানে ট্রেন নাই। প্রবাসীরা যেসব জায়গা যায় যেমন: ঢাকা–সিলেট, ঢাকা–চট্টগ্রাম এসব রুটে আলাদা ব্যবস্থা নেব। ফাওজুল কবির বলেন, রেলের প্রকল্পগুলো নিয়ে রিভিউ (পর্যালোচনা) চলছে। অনেক প্রকল্প আগে হয়েছে, যেগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ। সামনে রেলের প্রকল্প নিয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক। আমরা সামনে বসব। কোন প্রকল্প কেন বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা আমরা জানাব । রেলের ঠিকাদার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এখন আর আগের মতো পরিবেশ নেই। যেকেউ বিড করতে পারে। সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে। এখন গিয়ে দেখি দুই তিনজন ঘুরেফিরে কাজ পাচ্ছে। এটা আর হবে না। সবাই কাজ পাবে। রেল ও সড়ককে সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।