‘ডেস্ক রিপোর্ট: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার করা হবে। একটি ফ্যাসিস্ট দল কখনো গণতান্ত্রিক কাঠামোতে রাজনীতি করতে পারে না।’ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন বর্তমান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল পৌনে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, নির্বাচন ব্যাবস্থা সংস্কার কমিটির সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি মুশফিক উস সালেহীন এর সঞ্চালনায় এসময় আমন্ত্রিত অতিথিরা শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর এবং বক্তব্য রাখেন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আন্দোলনের সময় আমরা ঢাকাতে যখন নির্যাতিত হয়েছি, তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের আশা দেখাতো। দেশের সকল দল, সংগঠন মিলে আমরা নতুন বাংলাদেশ গঠন করবো। শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পদত্যাগ করেন নাই। তাকে পতন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিভাবে পালালো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ না থাকাই এর কারণ। এছাড়া যারা বড় বড় নেতা তারা আগে থেকেই ব্যাবস্থা করেছিল।
ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বললেও তাকে সম্মান করা হয়। সে ছিল ক্রিমিনাল, ডাকাত। পাড়ার মাস্তানদের সঙ্গে তাকে তুলনা করা যায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের একটা সংবিধান দরকার যেটা কাজ করবে,সেটা হতে পারে সংশোধন অথবা পুনর্লিখন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন বলেন, এই আন্দোলন থেকে আমাদের প্রত্যাশা ছিল পাহাড় সমান। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রাপ্তিগুলো পাহাড়ের পাদদেশে ঘুরঘুর করছে। মুজিববাদ মতবাদ বাংলাদেশে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ফ্যাসিস্ট মতবাদ। সেটার বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে।
সমন্বয়ক আরিফ সোহেল, আমাদের নয় দফা দাবি ছিল সমতা সৃষ্টি করা। যা এই ফ্যাসিস্ট সরকার পূরণে ব্যার্থ হয়েছে। ৬৯ এবং ৯০ এর পারে ২৪ এ আবার আমাদের আন্দোলন করতে হলো, এর কারণ হলো বাংলাদেশের রাজনৈতিতে এমন কিছু রয়ে গেছে যা গনতান্ত্রিক কাঠামো তৈরিতে বাধার সৃষ্টি করে। শেখ হাসিনা সরকার ছিল মাফিয়া সরকার। আমাদের এই ঐতিহাসিক বিপ্লবকে পূর্ণতা দিতে হবে। এক হাসিনা চলে গেছে, আরেক হাসিনা যেন প্রতিষ্ঠা না হয় তার ব্যাবস্থা আমাদেরই করতে হবে।
এর আগে আলোচনা সভার শুরতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এই আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবেন বলে তিনি জানান। আলোচনা সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে নির্মিতব্য শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নাহিদ ইসলাম।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম, প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম প্রমুখ।