ত্রাণের টাকা কোথায়

94

দেশের ১১ জেলায় বন্যার্তদের সহায়তায় তোলা ত্রাণের টাকা কোথায় আছে, সেটি নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের পর ত্রাণ হিসেবে পাওয়া অবশিষ্ট টাকা কোথায় আছে, তা নিয়ে গেল কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন।

এ অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফেইসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি স্পষ্ট করেন হাসনাত।

ওই পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, “গত ৪ সেপ্টেম্বরের প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে আমাদের টিএসসির ত্রাণ কর্মসূচির আয় ও ব্যয়ের হিসাব জানানো হয়েছিল। ব্যয় বাদে বাকি টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক শাখা, ইসলামি ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সংরক্ষিত রয়েছে।”

২০ অগাস্ট থেকে দেশের ১১ জেলায় বন্যা ছড়িয়ে পড়লে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, যার কেন্দ্র হয়ে ওঠে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসি।

গত ৪ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানায়, গণত্রাণ কর্মসূচিতে মোট অর্থ সংগ্রহ হয়েছে ১১ কোটি ১০ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৯ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সংগৃহীত অর্থ থেকে ১ কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা ব্যয় হয়েছে এবং অবশিষ্ট আছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৭৭৫ টাকা।

ওই সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা লুৎফর রহমান, আব্দুল কাদের, অদিতিসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে আরও লিখেছেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, একজন নারী শিক্ষার্থী ও একজন ছাত্রের নামে বিশেষভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, যেখানে শুধু এই তিনজনের সম্মিলিত সিগনেচারের মাধ্যমে টাকা হস্তান্তর করা সম্ভব। এখন পর্যন্ত ওই অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো টাকা হস্তান্তর করা হয়নি।”

তিনি বলেছেন, “স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আমরা ত্রাণ কার্যক্রমের আয় ও ব্যয়ের ওপর একটি অডিট করছি এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।

“আমরা সবসময় গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণে আগ্রহী। কোনো বিশেষ ভুল বুঝাবুঝি থাকলে অনুগ্রহ করে তা নির্দিষ্টভাবে তুলে ধরুন, যাতে আমাদের কাজ আরও কার্যকরী হতে পারে। আগামীর বাংলাদেশ হোক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মডেল।”

তবে, তার সেই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ত্রাণের টাকা কেন বিতরণ না করে অ্যাকাউন্টে রাখা হল, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

আসমা সুলতানা শাপলা নামের একজন মন্তব্য করেছেন, “আমি মনে করি, এই টাকার সবটাই বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যে ব্যয় করে জনগণকে বুঝিয়ে দিয়ে এই দায় শেষ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। ব্যাংকে জমা নয়।”

বেলাল রিজভী নামের একজন সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন, “বন্যার জন্য দিয়েছে। আপনার অ্যাকাউন্টে রাখার জন্য নয়। পরে আর বন্যার্তদের লাগবে না এই টাকা।”

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার হাসনাত আব্দুল্লাহকে কল করে ও এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।