আশুলিয়ার পানধোয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ

100

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার পানধোয়া এলাকায় এক গ্রীল ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ীর বাড়ির দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতর থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট সহ ওই ব্যবসায়ী এবং তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো: শাহীন আহম্মেদ আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আশুলিয়া থানার লিখিত ওই অভিযোগে শাহীন আহম্মেদ জানান, আমি ধামরাইতে গ্রীল ওয়ার্কসপ করিয়া ব্যবসা করি। আমি পানধোয়া এলাকায় বাড়ী করার পর হইতে পানধোয়া এলাকার মো: কাজিমুদ্দিন (৫৫), পিতা-মৃত আতাউর রহমান, মো: সাগর (২৫), পিতা-মোঃ কাজিমুদ্দিন, মোঃ রাসেল (২৫), পিতা মো: আব্দুল আজিজ, মো: সাব্বির (২৫), পিতা-মো: রসুল উদ্দিন সহ আরও কয়েকজন আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সমস্যা করিয়া আসিতেছিল। তারা আমাদের বাড়ী বিক্রি করিয়া চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিল। পাশাপাশি তারা আমাদের উপর বিভিন্ন অন্যায় অত্যাচার করতে থাকে।

গত ১৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ ভোর অনুমান সাড়ে ৬টার সময় আমার স্ত্রী সহ ধামরাই আমাদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থানকালে অজ্ঞাতনামা লোক ফোন করে জানায় যে আমার বাড়ীতে সমস্যা হয়েছে। তখন আমার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪০) সহ বেলা অনুমান সকাল ১০টার সময় আমার বাসায় পৌঁছে দেখি উক্ত বিবাদীগণ আরও লোকজন সহ আমার বাড়ীর সামনে অবস্থান করছে এবং আমার বাসার দরজা খোলা। এসময় বিবাদীদের মো: কাজিমুদ্দিন সহ এজাহারে উল্লেখিত অন্যদের জিজ্ঞাসা করলে তারা দরজা খুলেছে মর্মে জানায়। তখন কি জন্য আমার বাসার তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করেছে জিজ্ঞাসা করলে আমাদের বাসায় মেয়েমানুষ আছে মর্মে তারা সংবাদ পেয়ে দরজার তালা ভেঙ্গে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে তল্লাসী করেছে বলে জানায়। তখন আমি বাসার ভিতর প্রবেশ করে দেখি আমার বাসার মালামাল এলোমেলো অবস্থায় পরে আছে এবং আমার বাসার ওয়াড্রপের ড্রয়ারে রক্ষিত নগদ দুই লাখ একাত্তর হাজার টাকা, আমার স্ত্রীর এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, কানের দুল এক জোড়া ওজন অনুমান ১০ আনা ও এক জোড়া চূড়ি ওজন অনুমান দেড় ভরি সহ মোট অনুমান ৩ ভরি ২ আনা স্বর্ণের ওজন অনুমান তিন লাখ কুড়ি হাজার টাকা, একটি স্যামসাং টাচ মোবাইল যার মূল্য অনুমান আশি হাজার টাকা নাই। এগুলো বিবাদীগণ চুরি করেছে।

শাহিন আহম্মেদ আরও জানান, আমি তাদের আমার বাসায় রক্ষিত উল্লেখিত টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারপিট করে। বিবাদীগন আমাকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট করে আমার হাতে, পায়ে, মাথায়, কোমরে, পিঠে সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে নীলা ফুলা ও রক্ত জমাট জখম করে। আমার স্ত্রী ও ছোট বোন রুমা বেগম (৩৭) ছাড়াতে গেলে তাদেরকেও মারপিট করে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এসময় আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে ও আমাদের উদ্ধার করে। বিবাদীগণ আমাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। পরে আমি ও আমার স্ত্রী ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহন করে কিছুটা সুস্থ হই।

এব্যাপারে মুঠোফোনে ডেইলি ট্রাইবুনাল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার এস আর জয়কে বিবাদী মো: কাজীমুদ্দিন জানান, শাহিন আহম্মেদ তার এক আত্মীয় মারা যাবার খবর শুনে বাড়ি ফাঁকা রেখে পরিবার নিয়ে সেখানে যায়। এই সুযোগে বাসা ফাঁকা পেয়ে তার ছেলে এবং ছেলের বন্ধু বাসায় দুইটি বাজে মেয়ে নিয়ে আসে। বাড়ির নিচের রিক্সা গ্যারেজওয়ালা দেখতে পেয়ে জানালে সেখানে আমরা পাহারা বসাই। বিষয়টা বুঝতে পেরে শাহিনের ছেলে ও তার বন্ধু জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়। এর ধারাবাহিকতায় শাহিন বাড়িতে আসার পর এলাকার ছেলেরা তাকে ধরলে শাহিনকে বাঁচানোর জন্য আমি তাকে একটা থাপ্পর দিয়ে সাইড করে নিয়ে আসি। এসময় ছেলেপুলেদের গণপিটুনিতে শাহিনের স্ত্রীও দু’একটা চর-থাপ্পর খেয়ে থাকতে পারে। পরে ওই বাজে মেয়ে দুইজনকে তাদের অভিভাবকদের কাছে সোপর্দ করা হয়।

তবে তিনি বাদী শাহিন আহম্মেদ এর ঘর ভেঙ্গে লুটপাটের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক অলক কুমার দে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাদী শাহীন আহম্মেদ এর বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ: