বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি

44

ডেস্ক রিপোর্ট: ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আশঙ্কার মধ্যেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেশ বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিলটন আঘাত হানার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জ্বালানি তেলের বাড়তি চাহিদাও দাম বাড়াতে প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে জ্বালানির ব্যবহার বাড়তে পারে এমন সম্ভাবনার মধ্যে এই দাম বাড়ল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে, আগামী নভেম্বরে যে অপরিশোধিত ব্রেন্ট বিক্রি হবে তার বাজারদর ব্যারেলপ্রতি ২ দশমিক ৮২ ডলার বা ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল ব্রেন্টের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৭৯ দশমিক ৪০ ডলার। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট—যা আগামী নভেম্বরে বিক্রি হবে—তার দাম ব্যারেল প্রতি বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। গতকাল এই জ্বালানির দাম ব্যারেল প্রতি ২ দশমিক ৬১ ডলার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ দশমিক ৮৫ ডলারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং শীর্ষ ভোক্তা দেশও বটে। তবে গত বুধবার দেশটির ফ্লোরিডায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মিলটনের আগে অঞ্চলটিতে ব্যাপক জ্বালানি বিশেষ করে গ্যাসোলিন বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। অঙ্গরাজ্যটির প্রায় ৩৫ লাখ পরিবার ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় জ্বালানির চাহিদা আরও বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই বিষয়ে জ্বালানি বিষয়ক পরামর্শক সংস্থা রিটারবুশ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের বিশ্লেষকেরা বলেছেন, ‘বেশ কয়েকটি জ্বালানি টার্মিনাল বন্ধ, বিলম্বিত ট্যাংকার ট্রাক সরবরাহ এবং বিঘ্নিত পাইপলাইন চলাচল এবং বিস্তৃত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে আগামী সপ্তাহে সরবরাহ ভালোভাবে প্রভাবিত হবে।’ তারা আরও বলেন, ‘ফ্লোরিডার পেট্রোলিয়াম অবকাঠামো জুড়ে এই বিশাল অনিশ্চয়তা গ্যাসোলিনের দাম বৃদ্ধিকেই সমর্থন করেছে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন পেট্রলের দাম ৪ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।

এর আগে, গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান ১৮০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পর মাসের শুরুতে অপরিশোধিত জ্বালানির দাম বাড়ে। ইরানের তেল স্থাপনার বিরুদ্ধে ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক হামলা নিতে পারে এমন আশঙ্কার ভিত্তিতে দাম চড়েছিল। কিন্তু ইসরায়েল এখনো সেই অর্থে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর কারণে অপরিশোধিত জ্বালানির দাম আবারও শিথিল হয়েছে এবং সপ্তাহজুড়ে তুলনামূলকভাবে একই ছিল।

এদিকে, বেসরকারি খাতে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য চীন সরকার একটি নতুন খসড়া আইন প্রকাশ করেছে। বিনিয়োগকারীদের আশা, এই প্রণোদনা চীনের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করবে এবং এতে জ্বালানি চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এই বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। চীন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। দেশটি আগামী মাসে সুদহার কমাতে পারে এবং পাশাপাশি দেশটির মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের সবচেয়ে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে।