বাগেরহাটে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

5

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার পদ্মানগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপবৃত্তির কার্ড করিয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে  ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত অর্থ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দিকে পরীক্ষার ফি ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছায়েদুর রহমান।

মতিয়ার নামে একজন অভিভাবক ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেনও।
অভিভাবকদের দাবি, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ তোলেন। কেউ যদি দিতে অপারগতা জানায় তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যালয়ের মানসম্মত শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইউনুসের বাবা খান সাইফুল ইসলাম বলেন, উপবৃত্তির ফরম পূরণের জন্য ৪শ টাকা নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য স্কুলে এই ফরম পূরণের জন্য কোনো টাকা লাগে না।

রিজিয়া বেগম নামে অন্য এক অভিভাবক বলেন, আমরা খুবই দরিদ্র পরিবারের লোক। বিভিন্ন স্থানে কাজ করে খাই। মেয়ের পোশাক বানানোর জন্য শলা বিক্রির ৩শ টাকা রেখেছিলাম। সেই টাকা প্রধান শিক্ষককে দিয়েছি, ফরম পূরণের জন্য। পরে শুনেছি এ জন্য কোনো টাকা লাগে না। আমি টাকা ফেরত চাই এবং শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানাই।

স্থানীয় সালাম সরদার বলেন, ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে রফিকুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। স্কুলের ৬ মণ বই বিক্রির অভিযোগে ২০১৬ সালে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছিল। ২০২০ সালে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে ব্যবস্থাপনা কমিটি বরখাস্ত করেছিল। উভয় ঘটনায় মানবিক কারণে তাকে ক্ষমা করা হয়। এরপরও সে রেজিস্ট্রেশন, ফরম ফিলআপসহ বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেন।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের পরিচালনার জন্য সামান্য কিছু টাকা নেওয়া হয়। ভর্তির জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয় না। বিদ্যালয় পরিচালনা করার জন্য ২শ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, সরকার বিনামূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছে। কোনো টাকা নেওয়ার বিধান নেই স্কুলে, শুধু নির্ধারিত ফি ছাড়া অন্য কোনো অর্থ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে অন্যায় করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।