বহিরাগতের বাইকের ধাক্কায় জাবি শিক্ষার্থী আহত, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তায় প্রশাসনের ব্যর্থতা

22

ডেস্ক রিপোর্ট: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) অভ্যন্তরে বহিরাগতের বাইকের ধাক্কায় আহত জাবি শিক্ষার্থী। নিরাপত্তাকর্মীদের অবহেলায় ঘাতক পলাতক।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দ্রুতগতিতে আসা বাইকের ধাক্কায় আহত হয়েছে জাবি শিক্ষার্থী। আহত শিক্ষার্থী হলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুপ্ত মাহমুদ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৫:৩০ এর দিকে সুপ্ত মাহমুদ ও তার বন্ধু মীর মশাররফ হোসেন (এম এম এইচ) হল থেকে জিমনেসিয়াম এর দিকে যাচ্ছিলেন। বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে আসলে পিছন হতে এক বহিরাগত বাইক চালক সুপ্ত ও তার বন্ধুর উপর বাইক চালিয়ে দেয়। সুপ্ত সাথে সাথে জ্ঞান হারায়। সেই সময় জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসে কল দিলে নিরাপত্তা কর্মী নূর আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে সুপ্তকে তার দুই বন্ধু মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল এ নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে অন্য কোনো নিরাপত্তা কর্মী না থাকার পরেও বহিরাগতকে তার বাইক সহ ঘটনাস্থলে রেখে নিরাপত্তা নূর আলম কর্মী মেডিকেল এ চলে যায়। পরবর্তীতে এসে বহিরাগত বা বাইক কোনটার খোঁজ পাওয়া যায় নাই৷

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আহত শিক্ষার্থী সুপ্ত মাহমুদ বলেন, আমি ও আমার বন্ধু রাস্তার ধার দিয়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দ্রুতগতিতে বাইকটি এসে আমাদেরকে ধাক্কা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এভাবে দ্রুতগতিতে বাইক চালানো এবং আমাদের ধাক্কা দেওয়ার পরও আমরা সেখানে কোনো নিরাপত্তাকর্মীকে আসতে দেখি নি। পরবর্তীতে যে এসেছিল তার চোখকেও ফাঁকি দিয়ে ঘাতক পালিয়ে গেলো। আমি এর সঠিক তদন্ত আশা করছি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বহিরাগত প্রবেশ যাতে বন্ধ করা হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, আমি রিকশা নিয়ে এম এইচ হলের সামনে দিয়ে ট্রান্সপোর্টের দিকে যাচ্ছিলাম। রিকশাটি বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে আসলে দেখতে পাই কিছু মানুষ একত্রে দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় কয়েকজন এসে আমার কাছে মেডিকেলে যাওয়ার জন্য রিকশা চায়। আমি নেমে রিকশা দিয়ে দিই এবং আহত দুইজন রিক্সাতে করে মেডিকেলে যায়। এরপর নিরাপত্তা শাখার একজন কর্মকর্তাকে ঘটনা বলি এবং উনাকে মেডিকেলে খোঁজ নিতে বলি। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে নিরাপত্তাকর্মী নূর আলম ভাই আসেন। তখন আমি, নূর আলম ভাই এবং সেই ছেলে বাইকসহ ছিল। বাইকের ছেলেটিও আহত থাকায় আমাদের ধারণা ছিল ছেলেটিও বাকি দুইজন আহতদের সাথে। পরবর্তীতে আমি নিরাপত্তা কর্মী নূর আলম ভাইকে বলি আমাকে একটু মেডিকেলে রেখে আসার জন্য। এবং ছেলেটিকে মেডিকেলে আসতে বলি। পরে জানতে পারি ওই ছেলেটি বাইক দিয়ে ধাক্কা দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে ফেরত এসেও তাকে আর খুঁজে পাই নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, আমি তাৎক্ষণিক মেডিকেলে গিয়েছি এবং তাদের সাথে কথা বলেছি। আমি সেই চেকপোস্টের নিরাপত্তাকর্মীকে তলব করেছি। আমরা এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো। পাশাপাশি আমরা সকল সিসিটিভি ক্যামেরা সচল করতে ও বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ করতে কাজ করছি।