রাজনৈতিক সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রে ‘সাধারণ ঘটনায়’ পরিণত হচ্ছে?

56

যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের নিশানা করে সহিংসতা বন্ধ ছিল কয়েক দশক। কিন্তু মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে দুইবার তেমন পরিস্থিতি দেখল আমেরিকানরা; দুইবারই হামলার শিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

মাঝ জুলাইয়ে পেনসিলভানিয়ার বাটলারে নির্বাচনি প্রচারে বক্তব্য রাখার সময় তাকে লক্ষ্য করে চালানো গুলি ডান কান ছুঁয়ে যায়। পরে স্নাইপারের গুলিতে ২০ বছর বয়সী হামলাকারী নিহত হন।

দুই মাস বাদে রোববার বিকালে ফ্লোরিডায় এক গলফ রাউন্ড চলাকালে ফের ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হয় জানিয়ে এফবিআই বলছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তারা নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।

তদন্তকারীরা বলছেন, ওয়েস্ট পাম বিচ গলফ কোর্সে ট্রাম্প যখন খেলছিলেন, তখন একে-৪৭ এর মত অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে ঝোঁপের ভেতর অপেক্ষায় ছিলেন এক ব্যক্তি।

সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা দেখতে পাওয়ার আগেই ওই ব্যক্তি গুলি ছোড়েন। সন্দেহভাজন একটি গাড়িতে করে পালিয়ে গেলেও পরে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

বিবিসি লিখেছে, গত কয়েক বছর রাজনৈতিক সহিংসতার ছোট-বড় নানা ঘটনার ‘নতুন বাস্তবতার’ সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছে আমেরিকানদের। জাতীয়ভাবে ঐকমত্য কমেছে, রাজনৈতিক বিভাজন আরো স্পষ্ট হয়েছে, কমেছে প্রার্থীদের আচরণগত মান।

দেশটিতে বন্দুক সহিংসতার যে জাতীয় মহামারী চলছে, তাতে এই ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা সম্ভবত ‘নতুন বাস্তবতায়’ পরিণত হয়েছে, যদিও সেই ধাক্কা হজম করতে মার্কিনিদের বেগ পেতে হচ্ছে।

আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির কমলা হ্যারিস।

ফ্লোরিডার ঘটনার পর তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমেরিকায় সংঘাতের কোনো স্থান নেই।”

হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি আমেরিকার রাজনীতিতে কতটা প্রভাব পড়বে তা নির্ভর করছে আক্রমণকারীর পরিচয় ও উদ্দেশ্যের ওপর। ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বললেও আজকের যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সহিংসতা বাড়ছে।

সবশেষ হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর ডনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম বিবৃতিতে বলেছেন, কোনো কিছুই তাকে দমাতে পারবে না।

সমর্থকরা দাবি করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আক্রমণ করা হচ্ছে, কারণ তিনি সেই সব আমেরিকানদের (কৃষক, শ্রমিক ও মধ্যবিত্ত) পক্ষে কথা বলছেন, যাদের আমেরিকা ‘ভুলে গেছে’। আর আক্রান্ত হাওয়ার পর ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়াও ওই প্রচারের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়।

গেল জুলাইয়ে প্রথম হত্যাচেষ্টার সময় ট্রাম্প ‘লড়াই, লড়াই, লড়াই’ বলে যে আওয়াজ তুলেছিলেন, তা অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে সমর্থকদের।

ট্রাম্প বিষয়টা এভাবে বলেন– “তারা আমাকে আক্রমণ করছে না, তারা আসলে আক্রমণ করছে আপনাকে, আমি কেবল তার পথে দাঁড়িয়ে আছি।”

এখন নতুন করে হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বিষয়টি তার আগামী নির্বাচনী বক্তৃতার ধার বাড়াতে ব্যবহার করতে পারবেন।