ডেস্ক রিপোর্ট: ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পারমাণবিক তথা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মারাত্মক ঝুঁকির মুখে সারা বিশ্ব। স্নায়ুযুদ্ধের প্রায় ৪০ বছর পর ফের দুই ভাগে বিভক্ত এ বিশ্বে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের পাশে বেশিরভাগ দেশ থাকলেও শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষে কারা থাকবে, তা নিয়েও মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
একদিকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলো। অন্যদিকে রাশিয়াকে সমর্থন করছে উত্তর কোরিয়া, ইরান ও চীন। ইউক্রেন যুদ্ধ যদি শেষ পর্যন্ত ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে, তখন নিশ্চিতভাবে রাশিয়ার মিত্রদেশগুলো তার পাশে এসে দাঁড়াবে- এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।
জার্মানিরা এরই মধ্যে স্পষ্ট বলে দিয়েছে যে, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে তার দেশ ন্যাটো সেনাদের একটি মঞ্চে পরিণত হবে। ইউরোপের অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকতে এরই মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতিও শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে রাশিয়ার মিত্র দেশগুলোও তাদের পাশে থাকার জন্য প্রস্তুত।
ইরানকে রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশ বলে বিবেচনা করা হয়। যে কোনো পরিস্থিতিতে ইরান সবসময় রাশিয়াকে সমর্থন দিয়ে যাবে বলে তেহরান জানিয়ে দিয়েছে। কাজেই ইউক্রেন যুদ্ধ যদি শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের যুদ্ধে রূপ নেয়, সেক্ষেত্রে মস্কো ইরানের প্রকাশ্য সমর্থন পেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি এখন আর কারও অজানা নয়।
এরই মধ্যে রাশিয়ায় কয়েক হাজার সেনা পাঠিয়েছেন কিম। ধারণা করা হচ্ছে, এই যুদ্ধে এক লাখ পর্যন্ত সৈন্য মোতায়েন করতে পারে উত্তর কোরিয়া। তাই বড় ধরনের যুদ্ধ বাধলে পুতিন উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকেই যে সবচেয়ে বড় ধরনের সেনা ও অস্ত্র সহায়তা পাচ্ছেন, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এ ছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে খোলাখুলি সমর্থন দেন চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জান। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের ওপর চাপ অব্যাহত রাখলেও তারা ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনকে সমর্থন করেছেন। পশ্চিমা হুমকি ও নিষেধাজ্ঞার মুখেও বেইজিং এই অবস্থান বদলাবে না। এ রকম অবস্থায় বড় ধরনের যুদ্ধ বাধলে রাশিয়া চীনের মতো শক্তিশালী একটি দেশকে যে পাশে পাবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
একসময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ থাকা আর্মেনিয়া, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান ও বেলারুশের সমর্থন পাচ্ছেন পুতিন। এ দেশগুলো সার্বিকভাবে রাশিয়াকে সহযোগিতা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনও করা হয়েছে। আর লাতিন আমেরিকা থেকে কিউবার সমর্থন পাবে রাশিয়া, তা নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই বিশ্লেষকদের।