অনলাইন ডেস্কঃ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী সাতক্ষীরার ফুটবলার মাসুরা পারভীনের ঘরের দেয়ালে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের দেওয়া ক্রস চিহ্ন মুছে ফেলা হয়েছে। এতে তার বাড়িটি আর উচ্ছেদ করা হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার (২২শে সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সওজ কর্তৃপক্ষের দেওয়া এই লাল ক্রস চিহ্ন মুছে ফেলা হয়। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সদর উপজেলার ১৩নং লাবসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো আব্দুল আলিম এটি মুছে দেন।

এর আগে, সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা দাবি করে ওই বাড়িতে ক্রস চিহ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এরপর ‘ভেঙে ফেলা হতে পারে সাফজয়ী মাসুরার ঘর, দুশ্চিন্তায় পরিবার’শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই উচ্ছেদের চিহ্নটি মোছা হয় মাসুরাদের ঘর থেকে।

মাসুরার বাবা রজব আলী বলেন, ‘এই দাগ দেওয়ার পর থেকে খুবই চিন্তায় ছিলাম। সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে তারা সেটি মুছে ফেলার উদ্যোগ দিয়েছে। সাংবাদিকদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘যতদিন না পর্যন্ত মাসুরার পরিবার নিজেদের বাড়ি বাংলাদেশ সড়ক বিভাগের নির্ধারিত জায়গা থেকে সরিয়ে নতুন বাড়ি করবেন ততদিন পর্যন্ত তাদের (সওজ) কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ করা গেলো।’

এ সময় সাতক্ষীরা সদর ১৩ নং লাবসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, ‘মাসুরা পারভীন শুধু সাতক্ষীরার গর্ব না, আমাদের লাবসা ইউনিয়ন পরিষদের অহংকার। আমি নিজে হাতে সওজের দেওয়া লাল ক্রস মুছে ফেলেছি। তার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অবশ্যই সুনজর থাকবে।’

সাতক্ষীরা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বেতনা নদীর তীরে বিনেরপোতা এলাকায় মাসুরাদের বাড়ি। সেখানে তার মা-বাবা ও দুই বোন বসবাস করেন। মঙ্গলবার তাদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় ঘরের পেছনের দেয়ালে তিনটি ক্রস চিহ্ন দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মাসুরার বাবা রজব আলী বলেন, ‘২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে আমার মেয়ের একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। আমাদের থাকার জায়গা না থাকার বিষয়টি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর নজরে আসে। তখন তিনি আমাদের মাথা গোজার ঠাঁই করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আমাকে যে জমি দেওয়া হয় সেখানে ১৫ ফুট পানি জমে ছিল।

বলেন-বিভিন্ন দফতরে বহুদিন ছোটাছুটির পর সহায়তা পাইনি। বাধ্য হয়ে মাসুরার বঙ্গমাতা গোল্ড কাপের তিন লাখ টাকা দিয়ে মাটি ভরাট করি। সেই সময় মাসুরা ২৮ দিন বাড়িতে ছিল। তার ইচ্ছা ছিল দুই দিন বাড়িতে থেকে ঢাকায় যাবে। ২৬ দিনের মাথায় মেয়ের খেলার পুরস্কারের টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরি করি। এরপর মাত্র দুই দিন নতুন ঘরে থেকে ঢাকায় খেলতে চলে যায় মাসুরা।’

 

Bangladeshpost24.com

Previous articleঅনেক হয়েছে আর নয়; পুলিশের উদ্দেশ্যে খন্দকার মোশাররফ
Next articleমুন্সীগঞ্জে পুলিশের গুলিতে আহত যুবদল নেতা শাওন মারা গেছেন