বাংলাদেশ পোষ্ট ২৪ ডটকম: পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে ‘তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ’। সংগঠনটির উদ্যোগে শনিবার তিস্তাপারের লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত তিস্তা কনভেনশন-২০২২ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
শনিবার বেলা দুইটায় শুরু হয় কনভেনশনের মূল পর্ব। এতে সভাপতিত্ব করেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম হাক্কানী। স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান। ছয় দফা দাবিসংবলিত তিস্তা কনভেনশনের মূলপত্র উপস্থাপন করেন নদী গবেষক ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ।
ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:
১. তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন, তিস্তা নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ।
২. তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপশাখাগুলোর সঙ্গে নদীর আগেকার সংযোগ স্থাপন ও নৌ চলাচল পুনরায় চালু করা।
৩. ভূমিদস্যুদের হাত থেকে অবৈধভাবে দখল করা তিস্তাসহ তিস্তার শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা। নদীর বুকে ও তীরে গড়া ওঠা সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪. তিস্তার ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ। নদীভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন ও মৎস্যজীবীসহ নদীভাঙনে উদ্বাস্তু মানুষের পুনর্বাসন।
৫. তিস্তা মহাপরিকল্পনায় তিস্তা নদী ও তিস্তা–তীরবর্তী কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় কৃষক সমবায় সমিতি এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পকলকারখানা গড়ে তোলা।
৬. মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তাপারের মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
এতে আরও বক্তব্য দেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের লালমনিরহাট জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, বিশিষ্ট নাট্যসংগঠক মাখন লাল দাস প্রমুখ। বক্তারা জাতীয় সংসদের আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিস্তা কনভেনশন উপলক্ষে লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার মানুষেরা বিভিন্ন যানবাহন করে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডসহ তিস্তা ডিগ্রি কলেজ মাঠে এসে উপস্থিত হন।
কনভেনশন শুরুর আগে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের শিল্পীরা তিস্তাপারের গান, গণসংগীত ও দেশাত্মবোধক সংগীতের মাধ্যমে উপস্থিত মানুষকে উজ্জীবিত করেন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনু কনভেনশনের সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
bangladeshpost24.com