অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশে বিদেশি বিশেষ করে ভারতীয় সিনেমা চালানো নিয়ে অনেকদিন ধরেই একটি মহল প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। হল মালিকরা হিন্দি সিনেমা আমদানি ও প্রদর্শনে আগ্রহী। তাদের যুক্তি- সিনেমা হল বাঁচাতে হলে হিন্দি ও অন্য সিনেমা আমদানি করা জরুরি। অন্যদিকে, চলচ্চিত্রের শিল্পী কলাকুশলী, নির্মাতা ও প্রযোজকদের অনেকে এর তীব্র বিরোধিতা করছেন। তারা বলছেন, এতে আমাদের চলচ্চিত্র পিছিয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে। শিল্পী, প্রযোজক ও নির্মাতারা পথে বসবেন।
সরকারও বিদেশি সিনেমা আমদানির ক্ষেত্রে নীতিমালা করে দিয়েছে। সেই নীতিমালা মেলে ইতোমধ্যে কলকাতার কিছু সিনেমা আমদানি করে দেশের হলে মুক্তি দেয়া হয়। তবে সেসব সিনেমা মোটেই চলেনি।
গত সপ্তাহে হিন্দি সিনেমা আমদানি ও মুক্তি নিয়ে আবারও সিনেমা পাড়া সরব। এ নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন। তবে ডিপজল বরাবরই হিন্দি সিনেমা আমদানির বিপক্ষে। তিনি বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য একটি চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা দেখেছি, হিন্দি সিনেমা মুক্তি দেয়ার ফলে নেপালের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির সমৃদ্ধ সিনেমা হিন্দি সিনেমার কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের দেশে যদি একের পর এক হিন্দি সিনেমা চালানো হয়, তাহলে আমাদের চলচ্চিত্রও ধ্বংস হয়ে যাবে।
এই অভিনেতা আরো বলেন, হিন্দি সিনেমা সরাসরি আমদানি মানে আমাদের নিজস্ব শিল্পসংস্কৃতি ধ্বংস করা। দর্শক আমাদের দেশের শিল্প ও সংস্কৃতির সিনেমাই দেখতে চায়। ইতোমধ্যে ‘হাওয়া’, ‘পরান’সহ আরও বেশ কিছু সিনেমা দিয়ে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। সিনেমাগুলো কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। যে সিনেমা হলের সংখ্যা ৪০-৫০ এ নেমে এসেছিল, এখন তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। অনেকে এখন সিনেমা নির্মাণ করছেন। আমার পাঁচটি সিনেমা মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী রোজার ঈদে একটি, কোরবানির ঈদে একটি, দুই ঈদের মাঝে একটি এবং কোরবানির ঈদের পর বাকি দুটি সিনেমা মুক্তি দেব। আরও ছয়-সাতটি সিনেমার কাজ চলছে। অন্যদের সিনেমারও কাজ চলছে। এসব সিনেমা মুক্তি পেলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে।
এ অবস্থায় হিন্দি সিনেমা আমদানি করলে আমাদের সিনেমাগুলোর কি হবে প্রশ্ন রেখে ডিপজল বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রকে ঘুরে দাঁড় করানোর জন্য আমরা যারা একের পর এক সিনেমা নির্মাণ করছি, তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংসের মুখে পড়বে। কাজেই, আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এবং আমাদের দেশের সিনেমা বাঁচাতে বিদেশি সিনেমা আমদানি বন্ধ করতে হবে।
হিন্দি সিনেমা চালাতে হলে শিল্পী সমিতিকে দশ পার্সেন্ট দিতে হবে বলে সাধারণ সম্পাদক নিপুণ যে কথা বলছেন এ প্রসঙ্গে ডিপজল বলেন, এটা কোনো যুক্তির কথা নয়। যেখানে আমরা চাচ্ছি না, বিদেশি সিনেমা আমদানি করা যাবে না, সেখানে এ ধরনের কথা সমর্থনযোগ্য নয়। তাছাড়া, এটা শিল্পী সমিতির বিষয় নয়। আমরা শিল্পীরা সব সময়ই চলচ্চিত্রের স্বার্থে বিদেশি সিনেমা আমদানির বিরোধিতা করে আসছি। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। ফলে এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাছাড়া সমিতির মিটিংয়ে এমন কোনো কথা হয়েছে কিনা আমার জানা নাই।
Bangladeshpost24.com