অনলাইন ডেস্কঃ কিউবায় গণভোটে সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির জনগণ।

রবিবারে ওই গণভোটে ক্যারিবীয় এই দ্বীপদেশটির প্রায় দুই তৃতীয়াংশ নাগরিক পারিবারিক আইনের (ফ্যামিলি কোড) সংস্কারে অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এর ফলে দেশটিতে এখন সারোগেসির (সন্তান জন্ম দিতে গর্ভ ভাড়া নেওয়া) সুযোগ মিলবে, সমকামী পুরুষ দম্পতিও বাচ্চা দত্তক নেওয়ার অধিকার পাবে।

১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে সমকামীদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন চালানো, তাদেরকে শ্রম শিবিরে পাঠানো কিউবার জন্য এই গণভোট ‘বড় ধরনের বাঁক বদল’ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

দেশটির সিংহভাগ মানুষ এখন সমকামী বিয়ের পক্ষে রায় জানালেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এর বিরোধিতাও করছে।

নতুন পারিবারিক আইনের জন্য হওয়া রোববারের ওই গণভোট যে ১০০ পৃষ্ঠার নথির ওপর হয়েছে, তা ঠিক করতে দুই ডজনের বেশি খসড়া লিখতে হয়েছে, কমিউনিটি পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

কিউবার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি আইন পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং জনগণের সম্মতি আদায়ে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচারও চালায়।

রোববার ভোট দেওয়ার সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল বলেন, নতুন পারিবারিক আইনে মানুষ, পরিবার ও বিশ্বাসের বৈচিত্রের প্রতিফলন আছে এবং দেশের সিংহভাগ নাগরিকই এর পক্ষে রায় দেবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।

সোমবার প্রকাশিত প্রাথমিক ফলে তার কথার প্রতিফলন দেখা গেছে। তখন পর্যন্ত গণনাকৃত ভোটের ৬৬ শতাংশের রায়ই সংস্কারের পক্ষে পড়েছে বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানিয়েছেন নির্বাচনী কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আলিনা বালসেইরো।

সংস্কার অনুমোদিত হতে এর পক্ষে ৫০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকলেই হতো।

কমিউনিস্ট পার্টিশাসিত দ্বীপদেশটিতে সমকামিতার পক্ষে দৃষ্টিভঙ্গি গত কয়েক দশক ধরে বদলাচ্ছে; দেশটির সাবেক নেতা রাউল কাস্ত্রোর মেয়ে মারিয়েলার প্রচেষ্টাও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে।

১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর দেশটির ক্ষমতায় আসা ফিদেল কাস্ত্রোর শাসনামলের প্রথম দিকে সমকামী পুরুষ ও নারীদের ‘আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর দীক্ষা নিতে’ শ্রম শিবিরে পাঠানো হতো।

তবে এখনও অনেক কিউবানই, বিশেষ করে কট্টর খ্রিস্টান, এমনকী ধর্মবিশ্বাসী নন এমন অনেক রক্ষণশীলও সমকামিতাকে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে নন।

কমিউনিস্ট পার্টির বিরোধী অনেক গ্রুপও ‘না’ ভোট দেওয়ার প্রচার চালিয়েছিল; কমিউনিস্ট সরকারকে একহাত নিতে গণভোটে তাদেরকে পরাজিত করার আহ্বান ছিল তাদের।

সরকারবিরোধী অনেক কর্মীই মনে করছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালানো কিউবার কমিউনিস্টরা মানবাধিকার বিষয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রচেষ্টায় এই গণভোট করেছে।

এমন একটা সময়ে কিউবায় এ গণভোট হয়েছে, যখন দেশটি তীব্র জ্বালানি সংকটে ভুগছে।

জ্বালানি ঘাটতির কারণে দ্বীপদেশটির লাখ লাখ মানুষকে প্রতিদিন দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে।

 

 

Bangladeshpost24.com

Previous articleরামনাথ বিশ্বাসের বাড়ির পথে বাইসাইকেল শোভাযাত্রা
Next articleইউরিয়া সারের মধ্যে স্বর্ণের বার লুকিয়ে পাচারের চেষ্টা